থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
থানকুনি পাতার উপকারিতা
থানকুনি পাতা হলো এক ধরনের প্রাকৃতিক হার্ব যা আমাদের শরীরের জন্য নানান উপকারী। আদ্র বা ভেজা মাটিতে এটি জন্মায় ।এর বৈজ্ঞানিক নাম sentella asiatica ।এর পাতা কান্ড ও শিকড় সবগুলো ঔষধি গুণে ভরপুর যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।এর কিছু উপকারিতা দিক নিচে দেওয়া হল:
- মূত্রনালীর সংক্রমণ দূর করে।
- লিভার ভালো রাখে।
- ক্ষত নিরাময় করে।
- আর্থ্রাইটিস থেকে মুক্তি দেয়।
- কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- কাশি ও শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি দেয়।
- অনিদ্রা দূর করে।
- শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে দেয়।
- দ্রুত ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে।
- কাশির সমস্যা ভালো করে।
- থানকুনি পাতার অপকারিতা
- থানকুনি পাতা বাচ্চাদের তোতলামির সমস্যা ভালো করতে পারে।
- থানকুনি পাতা আমাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
চুলের জন্য থানকুনি পাতার উপকারিতা

- থানকুনি পাতা চুলের গোড়া শক্তিশালী করে ফলে চুল পড়া কমে এবং চুল দ্রুত বৃদ্ধি পায়।এর ভেতর থাকা উপাদান নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতাতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট চুলের ফলিকল শক্তিশালী করে চুল পড়া রোধে করে। চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং চুলে পুষ্টি উপাদান পৌঁছাতে সহায়তা করে।
- থানকুনি পাতাতে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান চুলের খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতা চুলের প্রাকৃতিক ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। চুলকে মসৃণ ও ঝলমলে করে।চুলকে সতেজ ও স্বাস্থ্যবান রাখে এবং চুলের শুষ্কতা দূর করে ত্বককে হাইড্রেট রাখে।
থানকুনি পাতা খেলে কি হয়
থানকুনি পাতা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি আমাদের শরীরের নানান রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।
এটি পেটের সমস্যা থেকে শুরু করে ত্বক, চুল এবং শরীরের নানান রোগ নিরাময়ে কাজে লাগে। থানকুনি পাতা আমাদের মস্তিষ্কের উন্নতি সাধনে সহায়তা করে।
গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়া নিয়ে অনেকের ভেতর নানান কৌতুহল রয়েছে যেমন: গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়া যায় কিনা, কতটুকু খাওয়া উচিৎ, কিভাবে খেতে হবে ও কতদিন পর পর খাওয়া উচিৎ ইত্যাদি। গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়া যায় তবে খাওয়ার আগে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতার অনেক উপকারিতা আছে। থানকুনি পাতাতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এবং স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধির উপাদান যা গর্ভাবতী মায়ের স্বাস্থ্যর জন্য খুবই উপকারী।
- গর্ভাবস্থায় অনেকেই গ্যাস্ট্রিক বা হজমের সমস্যা ভোগেন। থানকুনি পাতা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- থানকুনি পাতা শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে যা প্লাসেন্টার কার্যকারিতা বাড়ায়।
- গর্ভাবস্থায় হরমোনের কারণে ত্বকে সমস্যা দেখা দিতে পারে , থানকুনি পাতা ত্বকের ক্ষত নিরাময় করতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতা গর্ভাবস্থায় মানুষিক চাপ ও দুশ্চিন্তা দূর করতে সাহায্য করে এবং এতে থাকা উপাদান স্নায়ুকে শিথিল করতে সাহায্য করতে পারে।
যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা

থানকুনি পাতা যৌবন ধরে রাখার একটি প্রাকৃতিক ভেষজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।এটি শরীরের কোষকে সজীব রাখতে এবং বার্ধক্য রোধে সহায়তা করতে পারে।
থানকুনি পাতাতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান যা শরীরের ফ্রি রেডিক্যাল কমিয়ে ত্বকের বার্ধক্য রোধে সহায়তা করে।থানকুনি ত্বকের কোষে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায় যা ত্বককে মসৃণ ও টানটান রাখে। এটি রক্ত পরিশোধনের মাধ্যমে ত্বককে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল রাখে।
থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
থানকুনি পাতার অনেক উপকারিতা রয়েছে তবে ভালো ফলাফলের জন্য এটি খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানা জরুরী।
সকালে খালি পেটে ৫ থেকে ৭ টি পাতা সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ দিন খাওয়া যেতে পারে।
সকালে খালি পেটে ৫ থেকে ৭ টি পাতা সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ দিন খাওয়া যেতে পারে।
বাচ্চাদের থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
থানকুনি পাতার উপকারিতা অনেক তবে বাচ্চাদের খাওয়ানোর ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত ১ থেকে ২ বছর বয়সী বাচ্চাদের জন্য খুবই অল্প পরিমাণ দিতে হবে। এই বয়সী বাচ্চাদের জন্য ১ বা আধা চা-চামচ দিলেই হবে। এবং ৩ থেকে ৭ বছর বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারেন তবে ১ চা চামচের বেশি না দেওয়ায় ভালো।
পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
থানকুনি পাতা পেটের বিভিন্ন সমস্যার জন্য খুবই উপকারী। এটি পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন: গ্যাস,পেট ফোলা, আলসার কিংবা আমাশয়ের মতো রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। তাছাড়া আমাদের হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। হজমে সাহায্য করে। পেটের আলসার দূর করে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ভালো করে। আমাশয়ের মতো সমস্যা ভালো করে। হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। পেটের রোগের চিকিৎসা কাজে দেয়।
থানকুনি পাতা খেলে ফর্সা হয়
থানকুনি পাতা ত্বককে সরাসরি ফর্সা করতে পারে না। তবে এটি বিভিন্ন ভাবে ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নতি করতে সক্ষম। থানকুনি পাতাতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি ত্বকের দাগ ছোট দূর করে এবং ত্বককে মসৃণ করে,যার ফলে ত্বক কিছুটা ফর্সা দেখায়।
তবে থানকুনি পাতা ত্বককে সরাসরি ফর্সা করাতে না পারলেও এটি ত্বকের বিভিন্ন ভাবে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। থানকুনি পাতা ত্বকে ব্রণের সমস্যায় খুব ভালো কাজ করে। এটি ব্রণের ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ব্রণের সমস্যা ভালো করে। ত্বককে মসৃণ ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে। কোনো আঘাত বা ক্ষত দ্রুত নিরাময়ে সাহায্য করে। বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।
তবে থানকুনি পাতা ত্বককে সরাসরি ফর্সা করাতে না পারলেও এটি ত্বকের বিভিন্ন ভাবে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। থানকুনি পাতা ত্বকে ব্রণের সমস্যায় খুব ভালো কাজ করে। এটি ব্রণের ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ব্রণের সমস্যা ভালো করে। ত্বককে মসৃণ ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে। কোনো আঘাত বা ক্ষত দ্রুত নিরাময়ে সাহায্য করে। বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।
থানকুনি পাতার অপকারিতা
থানকুনি পাতার অনেক উপকারিতা দিক আছে তবে এটির সঠিক ব্যবহার না জানলে এটির বিভিন্ন পার্শ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।- অতিরিক্ত পরিমাণে থানকুনি পাতা গ্রহণে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- যাদের থানকুনি পাতাতে এলার্জি আছে তাদের এটি সেবনে এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহারে কিডনি ও লিভারের সমস্যা হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত কেননা এটির ভুল ব্যবহার গর্ভপাতের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- থানকুনি পাতা রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম। তবে এটি রক্ত চাপ অতিরিক্ত কমিয়ে দিতে পারে । বিশেষ করে যারা রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে ঔষধ সেবন করছে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url