হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা ও শিকড় খাওয়ার নিয়ম


আপনি যদি হাতিশুর গাছের উপকারিতা ও শিকড় খাওয়ার নিয়ম, হাতিশুর গাছ চেনার উপায়, হাতিশুর গাছের অপকারিতা, হাতিশুর গাছ দেখতে কেমন, হাতিশুর গাছের পরিচিতি, হাতিশুর গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ইত্যাদি হাতিশুর গাছ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন
হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা ও শিকড় খাওয়ার নিয়ম

তাহলে আপনি এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা হাতিশুর গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। চলুন তাহলে নিচে হাতিশুর গাছের উপকারিতা ও শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসা যাক।

পেইজ সূচি: হাতিশুর গাছের উপকারিতা ও শিকড় খাওয়ার নিয়ম

                হাতিশুর গাছের উপকারিতা

                • হাতিশুর গাছের সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো এর অসংখ্য উপকারিতা। এটি আমাদের দেহের অভ্যন্তর থেকে শুরু করে বাহ্যিক নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। নিচে এর কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
                • হাতিশুর গাছ আমাদের দেহের বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সহায়তা করে। এর পাতার রস লিভার ও কিডনিকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ফলে আমাদের শরীর থেকে টক্সিন পদার্থ সহজেই বেরিয়ে যায়। এটি প্রাকৃতিকভাবে একটি ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে।
                • হাতির শুর গাছ আমাদের হজমের সমস্যা ও গ্যাস দূর করতে সাহায্য করে। অনেকেরই অজীর্ণতা, গ্যাস বা পেটের ব্যথার সমস্যায় ভোগেন। হাতিশুর পাতার রস বা গুঁড়া খেলে হজমতন্ত্র শক্তিশালী হয় এবং পেট পরিষ্কার থাকে।
                • হাতিশুর গাছের প্রাকৃতিক উপকারী উপাদান আমাদের রক্ত পরিশোধক হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত হাতিশুর গাছের রস সেবন করলে আমাদের ত্বকের ফুসকুড়ি, চুলকানি বা ব্রণ কমে যায়। তাছাড়া, এটি রক্তে জমে থাকা ক্ষতিকর উপাদান দূর করে ফলে আমাদের শরীরে নতুন করে শক্তি পাই।
                • হাতিশুর গাছের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল গুণ রয়েছে। যা আমাদের ক্ষত, ঘা বা ইনফেকশন সারাতে খুব ভালো কাজ করে। অনেকে হাতিশুর পাতার রস সরাসরি ক্ষতস্থানে লাগিয়ে আরাম পান।
                • হাতিশুর গাছ আমাদের শরীরের রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে। হাতিশুর গাছের রস আমাদের রক্তের শর্করার মাত্রা ও চর্বির মাত্রা কমায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
                • হাতিশুর গাছ প্রদাহনাশক ও ব্যথানাশক হিসেবেও ভালো উপকারী কাজ করে। এছাড়াও বাত, গেঁটে ব্যথা বা পেশীর ব্যথায় হাতিশুর পাতা সেদ্ধ করে সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায়।

                হাতিশুর পাতার উপকারিতা

                • হাতিশুর পাতার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ভেষজ চিকিৎসায়। এই পাতায় আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্ল্যাভোনয়েড ও ভিটামিন সি যা আমাদের ত্বক, চুল এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গে উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
                • প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পরিমিত পরিমাণ হাতিশুর পাতার রস খেলে আমাদের শরীর থেকে টক্সিন পদার্থ দূর হয় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি বিশেষ ভাবে পেটের কোষ্ঠকাঠিন্য ও অম্লতা দূর করে।
                • হাতিশুর পাতা লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। যাদের লিভার দুর্বল বা ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত হাতিশুর পাতার রস খেলে ভালো উপকার পেতে পারেন।
                • হাতিশুর পাতার রস আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। এটি শরীরের ভেতর থেকে রক্তকে পরিশোধন করে ফলে ফুসকুড়ি, ব্রণ ও দাগ দূর হয়। অনেক আয়ুর্বেদিক বিউটি প্রোডাক্টে হাতিশুর গাছের অংশ ব্যবহার করা হয়।
                • চুলের যত্নেও হাতিশুর পাতা কার্যকরী। এটি আমাদের চুল পড়া কমায়, খুশকি দূর করে ও মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখে। গরম পানিতে হাতিশুর পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে মাথা ধুলে চুলের গোড়া শক্ত হয় ও নতুন চুল গজায়।

                হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা

                • হাতিশুর গাছের শিকড়ে অসাধারণ ওষধি গুণ রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। প্রাচীন কাল থেকে মানুষ তাদের বিভিন্ন ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহার করে আসছে। মূল অংশটি শুকিয়ে গুঁড়া করে রাখলে তা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়।
                • হাতিশুর শিকড় মূত্রবর্ধক ও পাথর নিরাময়কারী হিসেবে পরিচিত। যাদের প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা কিডনিতে পাথরের সমস্যা আছে, তারা হাতিশুর মূলের রস খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।
                • এছাড়াও হাতিশুর শিকড় আমাদের জ্বর ও বাত ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। গরম পানিতে শিকড় সেদ্ধ করে সেই পানি খেলে আমাদের দেহের প্রদাহ কমে যায়।
                • হাতিশুর আরও একটি উপকারী গুণ হলো এটি নারীদের সমস্যা যেমন অনিয়মিত মাসিক বা অতিরিক্ত রক্তস্রাব সমস্যায় ভালো কাজ করে। আয়ুর্বেদে এই গাছকে প্রজনন শক্তি বৃদ্ধিকারক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
                • আমাদের শরীরের দুর্বলতা বা ক্লান্তি দূর করতে হাতিশুর এর মূল খুবই উপকারী। হাতি শুর শুকিয়ে গুঁড়া করে মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে আমাদের শরীরের শক্তি ফিরে আসে। এটি শরীরে প্রাকৃতিক ভাবে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

                হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম

                • হাতিশুর গাছের শিকড় সঠিক নিয়মে খাওয়া হলে এ থেকে ভালো উপকার পাওয়া সম্ভব। শিকড়টি প্রথমে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিন। পরে পাউডার আকারে প্রস্তুত করুন। পাউডার আকারে এটি সরাসরি খাওয়া যায় বা চা, দুধ বা অন্য কোনো তরল সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
                • সাধারণত প্রতিদিন ১ থেকে ২ চা চামচ শিকড়ের গুঁড়া খেতে পারেন। চা হিসেবে খেলে প্রতি দিনে ১ থেকে ২ কাপ খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য নিরাপদ। হাতিশুর গাছের রস খালি পেটে বা হালকা খাবারের সঙ্গে খেলে এটি বেশি কার্যকরী হয়। সকালে খালি পেটে খাওয়া হলে আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়, হজম প্রক্রিয়াকে উন্নতি করে ও মানসিক সতেজতাকে বৃদ্ধি করে ।
                • বাচ্চাদের জন্য অবশ্যই খুবই সামান্য পরিমাণে খাওয়ানো উচিত। কেননা শিশুদের হজম শক্তি প্রাপ্তবয়স্কদের মতো অতটা শক্তিশালী নয়। তাই তাদের জন্য খুবই কম পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত। গর্ভবতী বা স্তনদানকারী নারীরা অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত।
                • হাতিশুর গাছের শিকড়ের নির্যাস বা পাউডার দীর্ঘ দিন ব্যবহার করলে আমাদের দেহে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাই, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নতি ঘটে, যৌন কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শক্তি বৃদ্ধির মতো উপকার পাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত খেলে আমাদের লিভার ও কিডনিতে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে তাই পরিণত মাত্রায় মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

                হাতিশুর ফুল ও বীজের উপকারিতা

                • হাতিশুর ফুল ও বীজ ছোট হলেও এটি ওষধি গুণে ভরপুর। ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের কোষের বার্ধক্য রোধ করতে সাহায্য করে। এর নির্যাস ত্বকের কোষকে পুনর্গঠন ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
                • হাতিশুর বীজের গুঁড়া প্রাকৃতিকভাবে কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে। ছোট শিশুদের পেটের কৃমি দূর করতে আয়ুর্বেদে হাতিশুর বীজের ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
                • হাতিশুর ফুলের নির্যাস আমাদের শ্বাসকষ্ট, কাশি ও গলাব্যথা কমাতে সহায়ক। গরম পানিতে ফুল সেদ্ধ করে সেই পানি পান করলে গলা ব্যথা ও সর্দি ও কাশিতে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
                • হাতিশুর বীজে থাকা পুষ্টিগুণ রক্তের সঞ্চালনকে উন্নত করে এবং হার্টকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি পুরুষদের প্রজননক্ষমতা উন্নত করতেও সহায়তা করে বলে প্রাচীন আয়ুর্বেদে উল্লেখ আছে।

                হাতিশুর গাছের ডালের উপকারিতা

                • ডাল মূত্রনালিকে পরিষ্কার করে এবং প্রস্রাব সহজে বের হতে সাহায্য করে।
                • মূত্রনালির প্রদাহ কমিয়ে প্রস্রাবের জ্বালা উপশম করে।
                • হাতিশুর ডালের নির্যাস কিডনির ছোট পাথর ভাঙতে সাহায্য করে।
                • হাতিশুর গাছের ডাল কিডনিতে জমে থাকা পাথর ধীরে ধীরে বের করে দিতে পারে।
                • প্রাকৃতিকভাবে শরীর ঠান্ডা রাখে এবং জ্বর কমাতে সাহায্য করে।
                • আমাদের পেটের গ্যাস্ট্রিক, অম্বল ও পেটে জ্বালা পোড়া কমাতে ভালো কার্যকরী।
                • পাকস্থলীর প্রদাহ কমিয়ে হজম উন্নত করতে সাহায্য করে।
                • হাতিশুর গাছ হালকা কষ গুণ থাকায় পাতলা পায়খানা ও ডায়রিয়া কমাতে পারে।
                • পেটের ইনফেকশনজনিত সমস্যা ও আমাশয়ে দূর করতে সাহায্য করে।
                • হাতিশুর গাছের ডাল প্রাকৃতিক ডাইইউরেটিক হিসেবে কাজ করে যা আমাদের শরীর থেকে বাড়তি পানি বের করে দেয়।
                • আমাদের চোখের আশপাশের ফোলা ভাব কমাতে সহায়ক।
                • আমাদের শরীর থেকে টক্সিন পদার্থ বের করে রক্ত পরিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে। রক্ত বিশুদ্ধ হওয়ার কারনে মুখের ব্রণ, দাগ ছোপ দূর হয়।
                • হাতিশুর গাছ লিভারের ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করে ও লিভারকে পরিষ্কার রাখে এবং এর কাজকে স্বাভাবিক করে।
                • গলা ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
                • গরম পানিতে ডাল ভিজিয়ে খেলে সর্দি ও কাশিতে উপকার পাওয়া যায়।
                • শরীর ঠান্ডা রাখার মাধ্যমে অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্য হওয়া ক্লান্তি কমায়।
                • আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
                • মূত্রনালির জীবাণু কমিয়ে ইউটিআই এর উপসর্গ উপশম করে।

                হাতিশুড় গাছের ব্যবহার বিধি

                • হাতিশুর গাছের সঠিক উপকারিতা নিশ্চিত করতে আমাদের কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। হাতিশুর গাছের প্রতিটি অংশ যেমন শিকড়, পাতা, ডাল এবং গুঁড়া আলাদা উপায়ে গ্রহণ করা হয় এবং হাতিশুর এর কার্যকারিতা সেই অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।
                • শিকড় খাওয়ার ক্ষেত্রে এটি ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। শুকনো বা পাউডার আকারে ব্যবহার করলে বেশি কার্যকর হয়। হাতিশুর গাছের পাউডার চা, দুধ বা হালকা খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে । প্রাপ্তবয়স্করা সাধারণত দিনে ১ থেকে ২ চা চামচ শিকড়ের গুঁড়া খেতে পারেন। খালি পেটে খেলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ও শরীর শক্তি বৃদ্ধি করে।
                • হাতিশুর এর পাতা ব্যবহার করা হলে পেস্ট বা রস আকারে ত্বকে বা খাবারে ব্যবহার করা যায়। পাতা আমাদের ত্বকের ক্ষত সারানো, সংক্রমণ প্রতিরোধ ও প্রদাহ হ্রাসে খুব ভালো কার্যকরী। হাতিশুর এর ডাল চা হিসেবে খাওয়া হলে এটি আমাদের শরীরকে সতেজ রাখে, হজম শক্তি উন্নত করে এবং ক্লান্তি দূর করে।

                হাতিশুঁড় গাছের গুঁড়া খাওয়ার সঠিক সময়

                হাতিশুর গুঁড়া থেকে সর্বোচ্চ উপকার পেতে হলে আমাদের সঠিক সময় মেনে হাতিশুর গাছ খাওয়া উচিত। সাধারণত সকালে খালি পেটে বা হালকা খাবারের সাথে হাতিশুর গাছের গুঁড়া খাওয়া সবচেয়ে বেশি কার্যকরী । প্রতিদিন সন্ধ্যার দিকে হালকা খাবারের সাথে হাতিশুর গাছ খাওয়া হলে আমাদের ঘুম ভালো হওয়ার সাথে সাথে শরীরে নানান রোগব্যাধি নিরাময় করে।

                হাতিশুর গাছের অপকারিতা

                • হাতিশুর গাছের উপকারিতা অনেক তবুও এর ভুল ও সঠিক নিয়মে ব্যবহার না করলে আমাদের শরীরে এর অপকারিতা দেখা যেতে পারে। হাতিশুর গাছের শিকড়, পাতা বা গুঁড়া অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা ঝুকি থেকে যায়। সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা হলো হজমের সমস্যা হতে পারে, পেটের ব্যথা, ডায়রিয়া এবং বমি।
                • গর্ভবতী বা স্তনদানকারী নারীদের জন্য হাতিশুর গাছ খাওয়া কিছু ক্ষেত্রে অপকারী হতে পারে। এতে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় হাতিশুর গাছের শিকড় বা গুঁড়া সতর্কতার সাথে খাওয়া উচিত।
                • কিছু মানুষের ক্ষেত্রে হাতিশুর গাছ খেলে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আমাদের শরীরে চুলকানি, লাল দাগ, শ্বাসকষ্ট বা ফুসকুড়ি এমন প্রতিক্রিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যারা উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি বা লিভারের সমস্যা ভুগছেন তাদেরকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া হাতিশুর গাছ খাওয়া উচিত নয়।
                • হাতিশুর গাছের অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের শরীরের জন্য অপকারিতা হতে পারে। হাতিশুর গাছের সঠিক মাত্রা, সঠিক সময় এবং সঠিক অংশ গ্রহণ করলে সাধারণত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। তাই হাতিশুর গাছ ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

                হাতিশুর গাছের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

                হাতিশুর গাছ প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে অনেক উপকারী হলেও কিছু ক্ষেত্রে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে । বিশেষ করে অতিরিক্ত বা নিয়ম না মেনে খেলে আমাদের শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
                • হাতিশুর গাছ বেশি পরিমাণে খেলে হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
                • হাতিশুর গাছের আমাদের পেট পরিষ্কার করার ক্ষমতার কারণে অতিরিক্ত সেবনে পাতলা পায়খানা হতে পারে।
                • সংবেদনশীলদের পেটে গ্যাসের সমস্যা বাড়াতে পারে।
                • গাছ অতিরিক্ত তিক্ত স্বাদের কারণে বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
                • কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ক্ষুধা কমে যেতে পারে।
                • দীর্ঘদিন ধরে হাতিশুর গাছ বেশি মাত্রায় সেবনে কিডনির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
                • লিভারের সমস্যা বাড়তে পারে ।
                • আমাদের শরীর অতিরিক্ত ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে।
                • রক্তচাপ কমিয়ে দিতে পারে ফলে মাথা ঘোরতে পারে।
                • কিছু কিছু মানুষের ত্বকে বা শরীরে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
                • কারোর হাতিশুর গাছের নির্যাসের প্রতি সংবেদনশীলতা থাকলে চর্ম প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
                • শরীরের পানিশূন্যতা তৈরি করতে পারে।
                • রক্তচাপ অতিরিক্ত কমে যেতে পারে।
                • গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ বা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
                • স্তন্যদায়ী মায়েদের জন্য হাতিশুর গাছ খাওয়া অনিরাপদ।
                • অতিরিক্ত দূর্বলতা বা অলসভাব দেখা দেয়।
                • ডায়াবেটিস, বিপি এবং কিডনির ওষুধের সাথে খেলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
                • রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
                • দীর্ঘদিন ধরে খেলে আমাদের শরীরের পুষ্টির ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।

                যৌন সমস্যায় হাতিশুঁড় গাছের শিকড়ের উপকারিতা

                হাতিশুর গাছের শিকড় মানুষ প্রাচীনকাল থেকে যৌন স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য ব্যবহার করে আসছে। এটি পুরুষ ও মহিলাদের যৌন সমস্যা ভালো করতে সাহায্য করে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি লিবিডো বৃদ্ধি করে, যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে ও বীর্যপাতের সময়কাল বাড়াতে সাহায্য করে। মহিলাদের ক্ষেত্রে হাতিশুর গাছ হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, ক্লান্তি দূর করে ও যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে ভালো কাজ করে। নিয়মিত হাতিশুর গাছের শিকড় খেলে আমাদের মানসিক চাপ কমায়, ঘুমের মান উন্নত করে। শিকড়ের ব্যবহার রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে যার ফলে আমাদের যৌন অঙ্গের কার্যকারিতা আরো উন্নতি হয়। 
                আরো পড়ুন: অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম গার্মেন্টস সহ সকল সেক্টরের
                আরো পড়ুন: সুরমা মাছ ও টুনা মাছের পার্থক্য-টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ
                আরো পড়ুন: আসল শিলাজিৎ চেনার উপায়-শিলাজিৎ বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়

                হাতিশুর গাছ দেখতে কেমন

                হাতিশুর গাছের উচ্চতা

                হাতিশুর গাছ একটি মাঝারি আকারের বনজ উদ্ভিদ। যার শিকড়, কান্ড, পাতা ও ফুল প্রতিটি অংশেই ঔষধি গুণসম্পন্ন। হাতিশুর গাছ সাধারণত ১.৫ থেকে ৩ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। শিকড় কাঁড়াযুক্ত ও শক্ত যা বিভিন্ন ঔষধি প্রস্তুতির জন্য ব্যবহার করা হয়।

                হাতিশুর গাছের রং
                হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা ও শিকড় খাওয়ার নিয়ম

                পাতাগুলি সবুজ, লম্বা এবং আকারে সাধারণত তীক্ষ্ণ প্রান্তযুক্ত। পাতা ধনুকাকৃতি বা দীর্ঘ আকারের হয় এবং পাতার উপরি ভাগ মসৃণ ও নিচে দিকে হালকা রঙের। গাছের কান্ড শক্ত ও সবুজ থেকে বাদামী রঙের হয়। শিকড় মূলত মাটির নিচে বিস্তৃত, যা গাছকে দৃঢ় রাখে।

                হাতিশুর গাছের ফুল

                ফুল ছোট, প্রায় সাদা বা হালকা হলুদ রঙের এবং সাধারণত গুচ্ছ আকারে জন্মে। ফুল থেকে ফল জন্মে যা ছোট, গোলাকার এবং প্রায় সবুজ বা হলুদ রঙের হয়। গাছের ডাল তুলনামূলকভাবে শক্ত, যা গাছকে বায়ু ও ঝড়ের প্রভাবে ভাঙা থেকে রক্ষা করে।

                হাতিশুর গাছ কোথায় পাওয়া যায়

                • হাতিশুর গাছ সাধারণত দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও মায়ানমার এর মতন এলাকায় বেশি পাওয়া যায়। বাংলাদেশে গ্রামীণ অঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকায় হাতিশুর গাছ বেশি দেখা যায়।
                • নদীর তীরে বা হালকা ছায়াযুক্ত বনাঞ্চলেও গাছটি ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে। পাহাড়ি অঞ্চলে হাতিশুর গাছের শিকড় মাটির গভীরে বিস্তৃত হয়। যা গাছটিকে ঝড় বা বন্যার সময় ভাঙা হাত থেকে রক্ষা করে।
                • হাতিশুর গাছ সাধারণত বনাঞ্চল, সরকারি বন রিজার্ভ বা ব্যক্তিগত জমিতে পাওয়া যেয়ে থাকে। অনেক সময় মানুষ গাছটির ঔষধি শিকড়, পাতা ও গুঁড়া সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন।
                • হাতিশুর গাছ চাষ যোগ্য এলাকায় এই গাছ খুব সহজে গজায় । আর্দ্র মাটি, পর্যাপ্ত আলো এবং নিয়মিত পানি দেওয়ার মাধ্যমে গাছ ভালোভাবে বেডে ওঠে। গাছের ছায়া ও মাটির শুষ্কতা এটি সহজে প্রতিরোধ করতে পারে তাই সঠিক পরিবেশে চাষ করা গুরুত্বপূর্ণ।

                হাতিশুর গাছের পাতা ও কাণ্ডের উপকারিতা

                হাতিশুর গাছের পাতা ও কাণ্ড সবই আমাদের শরীরের জন্য উপকারী ঔষধি উপাদান সমৃদ্ধ। হাতিশুর গাছের পাতা এবং কাণ্ডে থাকা প্রাকৃতিক ফাইটোকেমিক্যাল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে । 
                • হাতিশুর গাছের পাতা ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। 
                • এটি আমাদের শরীরের ক্ষত নিরাময়ে, প্রদাহ কমাতে ও বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধে হাতিশুর গাছের পাতার পেস্ট বা রস ব্যবহার করা যায়।
                • পাতার চা মানসিক চাপ কমায়।
                • ঘুমের মান উন্নত করে এবং শরীরকে দীর্ঘসময়ের জন্য সতেজ রাখে।
                • কাণ্ড বা ডাল আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
                • হাতিশুর গাছের ডালের চা শরীরে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।
                • শরীরের স্ট্যামিনা বাড়ায় এবং মানসিক সতেজতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
                • পুরুষ ও মহিলাদের যৌন স্বাস্থ্যে জন্য উপকারী।
                • এটি আমাদের শরীরের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে
                • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
                • হজম শক্তি উন্নত হয় ।

                হাতিশুর গাছ খাওয়ার নিয়ম

                • হাতিশুর গাছ খাওয়ার সঠিক নিয়ম মেনে চললে ও পরিমিত মাত্রায় খেলে এর থেকে সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। হাতিশুর গাছের শিকড়, পাতা, ডাল এবং গুঁড়া আলাদা আলাদাভাবে গ্রহণ করা যায় ও হাতিশুর গাছের প্রতিটি অংশের ব্যবহারের পদ্ধতি ভিন্ন।
                • হাতিশুর গাছ এর শিকড় সাধারণত শুকিয়ে পাউডার হিসেবে খাওয়া হয়। প্রতি দিনে ১ থেকে ২ চা চামচ গুঁড়া খেতে পারেন এতে দ্রুত ভালো উপকার পাবেন। এটি সরাসরি খাওয়া যায় চা, দুধ বা হালকা তরলের জাতীয় খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন । খালি পেটে খেলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়।
                • পাতা এবং ডালের ব্যবহার আমাদের ত্বক ও শরীরের জন্য খুবই উপকারী। হাতিশুর গাছের পাতা পেস্ট বা রস করে ত্বকে লাগানো যায় যা আমাদের ক্ষত নিরাময়, প্রদাহ কমানো এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ডাল চা হিসেবে খাওয়া শরীরকে সতেজ রাখে, হজম শক্তি উন্নত করে এবং ক্লান্তি দূর করে।

                হাতিশুর গাছের পরিচিতি

                হাতিশুর গাছ বৈজ্ঞানিক নাম Achyranthes aspera । এটি একটি বহু প্রাচীন ওষধিগুণ সম্পন্ন উদ্ভিদ যা শত শত বছর ধরে বিভিন্ন আয়ুর্বেদ, ইউনানি ও লোকচিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে। আমাদের দেশের গ্রাম অঞ্চল গুলোতে এই গাছটি খুব দেখা যায়। এই গাছটিকে অনেকেই আপাং, চিরচিতা, হাতিশুঁড় বা চিরচীতা গাছ নামে ও চিনে থাকে।
                • হাতিশুর গাছ দেখতে মাঝারি আকৃতির হয়ে থাকে।
                • এর পাতাগুলো সবুজ, নরম ও ডিম্বাকৃতির এবং কাণ্ডে হালকা কাঁটা থাকে।
                • ফুল ছোট, সাদা বা হালকা সবুজাভ রঙের হয় এবং ফলের ভিতরে ছোট ছোট বীজ থাকে।
                • এই গাছ সাধারণত রাস্তার ধারে, ঝোপঝাড়ে, অথবা পরিত্যক্ত জমিতে জন্মে।
                • যার উচ্চতা সাধারণত ১ থেকে ১.৫ মিটার পর্যন্ত হয়।
                • যদিও এটি দেখতে সাধারণ একটি আগাছার মতো, কিন্তু এর ভেতরে লুকিয়ে আছে অসাধারণ ঔষধি গুণ। প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে হাতিশুর গাছকে প্রাকৃতিক রোগনাশক বলা হতো কারণ এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে যেমন জ্বর, বাত, চর্মরোগ, পেটের সমস্যা, কিডনি ও লিভারের অসুখ ইত্যাদি।
                • হাতিশুর গাছের প্রতিটি অংশ যেমন পাতা, কাণ্ড, ফুল, বীজ ও মূল বিভিন্ন ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে থাকে।
                • হাতিশুর গাছের পাতার রস আমাদের শরীর থেকে টক্সিন পদার্থ বের করে।
                • শিকড় মূত্রবর্ধক হিসেবে ভালো কাজ করে।
                • ফুল পেটের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
                • আজকের আধুনিক যুগেও অনেক মানুষ প্রাকৃতিক উপায়ে সুস্থ থাকার জন্য এই গাছটি ব্যবহার করে আসছে। কেননা হাতিশুর গাছ কৃত্রিম রাসায়নিক ওষুধের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। বরং এটি আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য রক্ষা করে বিভিন্ন রোগ থেকে নিরাময় দেয়।
                • তবে, সব ধরনের প্রাকৃতিক ওষুধের মতো এটিও সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হয়। অতিরিক্ত বা ভুলভাবে ব্যবহার করলে এটি ক্ষতির কারণও হতে পারে। তাই এর সঠিক নিয়ম জানা জরুরি।

                হাতিশুর গাছের বৈজ্ঞানিক নাম

                হাতিশুর গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Salacia chinensis। Salacia chinensis পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এই গাছের মধ্যে এটি বিশেষ ভাবে পরিচিত। হাতিশুর গাছের শিকড় ও কাণ্ডে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটো কেমিক্যাল আমাদের শরীরের কোষকে রক্ষা করতে সাহায়্য এবং বার্ধক্য জনিত ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে এটি যৌন স্বাস্থ্য, হজম শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এই বৈজ্ঞানিক নাম ব্যবহার করে গবেষকরা গাছের ঔষধি গুণাবলী নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছেন।

                হাতিশুর গাছ নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা

                • হাতিশুর গাছ Salacia chinensis নিয়ে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রমাণ করেছে যে এটি আমাদের শরীরের জন্য উপকারি হয়ে থাকে। গবেষকরা হাতিশুর গাছের শিকড়, পাতা, ডাল এবং গুঁড়ার নির্যাস নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত উপকারিতা খুঁজে পেয়েছেন।
                • হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপর গবেষণায় দেখা গেছে এতে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীর এর কোষকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং লিভার ও কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে। এটি আমাদের যৌন স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সাহায্য করে ইত্যাদি।
                • হাতিশুর গাছের পাতা ও ডালের কার্যকারিতা নিয়েও বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন গবেষণা চালিয়েছেন। এতে দেখা গেছে হাতিশুর গাছের পাতা চা বা রস আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে ও মানসিক চাপ কমায়। ডালের চা শরীরকে সতেজ রাখে, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং স্ট্যামিনা বাড়ায়।

                হাতিশুর গাছ চাষ ও রক্ষণাবেক্ষণ

                • হাতিশুর গাছের চাষ করা সহজ হলেও কিছু নিয়ম মেনে চললে এই গাছ ভালোভাবে বৃদ্ধি পায় । এই গাছ লাগানোর স্থানটি আর্দ্র ও যেখানে সূর্যের আলো আসে সেখানে হওয়া উচিত। আর্দ্র মাটি এবং পর্যাপ্ত আলো পেলে এই গাছটি ভালোভাবে বেড়ে ওঠে এবং শিকড় ও পাতা ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়।
                • চারা বা বীজ থেকে এই গাছ জন্মাতে পারে। হাতিশুর গাছের বীজ ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে অঙ্কুরিতগম দ্রুত হয়। চারা লাগানোর সময় মাটি ভালোভাবে প্রস্তুত করতে হবে। মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈবসার মিশালে এই গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
                • পরিচর্যার মধ্যে নিয়মিত পানি দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার করা ও রোগ বালাই নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই গাছের শিকড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গাছকে সরাসরি মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে। অতিরিক্ত পানি বা শুষ্ক মাটি হাতিশুর গাছের বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
                • হাতিশুর গাছের ফল, পাতা ও শিকড় সংগ্রহের সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। শিকড় খোঁড়া হলে গাছের অন্যান্য অংশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

                শেষ কথা : হাতিশুর গাছের উপকারিতা ও শিকড় খাওয়ার নিয়ম

                উপরে আমরা  হাতিশুর গাছের উপকারিতা ও শিকড় খাওয়ার নিয়ম, হাতিশুর গাছ চেনার উপায়, হাতিশুর গাছের অপকারিতা, হাতিশুর গাছ দেখতে কেমন, হাতিশুর গাছের পরিচিতি, হাতিশুর গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ইত্যাদি হাতিশুর গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। যা থেকে আমরা বুঝতে পারি হাতিশুর গাছ 

                যা আমাদের দেশে খুব সহজে পাওয়া যাওয়া একটি ঔষধি গাছ যা আমাদের শরীরের নানান উপকারে কাজে লেগে থাকে। তবে হাতিশুর গাছের ভুল ব্যবহার ও অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাতিশুর গাছের অপকারিতা দেখা দিতে পারে। এজন্য হাতিশুর গাছ খাওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত।

                  এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

                  পরবর্তী পোস্ট দেখুন
                  এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
                  মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

                  অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

                  comment url