ডান অথবা বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে



আপনি যদি ডান অথবা বাম চোখ লাফালে ‍কি হয় ইসলাম কি বলে এ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি সঠিক পোস্টে ক্লিক করেছেন আমাদের সমাজের অনেকের ডান অথবা বাম চোখ লাফালে কি হয় এ সম্পর্কে কৌতুহল রয়েছে।

ডান অথবা বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে

ডান অথবা বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে ডান ও বাম চোখ লাফানো কি কোন ও অশুভ লক্ষণ মেডিকেল এ সম্পর্কে কি বলে এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কি এ সম্পর্কে কিছু হাদিস ও কোরানের আয়াত সম্পর্কে ও এই পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি।

পেইজ সূচি: ডান অথবা বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে 

ডান অথবা বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে 

আমাদের সমাজের মানুষের ভেতর চোখ লাফালো নিয়ে অনেক কুসংস্কার আছে। কিছু কিছু মানুষ মনে করে চোখ লাফালো হয়তো বা কোন শুভ লক্ষণ। আবার কিছু মানুষ মনে করে চোখ লাফানো কোন অশুভ লক্ষণ । এই জিনিসগুলো নিয়ে অনেক মানুষ দুশ্চিন্তায় ভোগে তবে এই সবগুলো ভুল ধারণা। অনেকেই এই ব্যাপারে বিশ্বাস করেন যে পুরুষদের যদি ডান চোখ কাঁপে তাহলে এটা একটা শুভ লক্ষণ। পুরুষদের ডান চোখ কাঁপা অর্থ তার কোন ইচ্ছা পূরণ হতে চলেছে। আর মহিলাদের ডান চোখ কাঁপা অশুভ লক্ষণ। আর অন্যদিকে মহিলাদের যদি বাম চোখ কাঁপে তাহলে এটা শুভ লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। 

অর্থাৎ  খুব শীঘ্রই কিছু পেতে চলেছে। অন্যদিকে পুরুষদের যদি বাম চোখ কাঁপে তাহলে এটা  শুভ লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। হিন্দুদের পাশাপাশি অনেক মুসলিমরাও এ ধরনের ভুল ধারণা বিশ্বাস করে থাকে। চোখের পাতা লাফানো নিয়ে এমন অনেক ভ্রান্ত ধারণা সমাজে প্রচলিত আছে । তবে কোরআন বা হাদিসে কোথাও ডান চোখ বা বাম চোখ লাফানো নিয়ে কোন কিছুই খুঁজে পাওয়া যায় না। হিন্দুরা বিশ্বাস করে ডান অথবা বাম চোখ লাফানো কোন শুভ ও অশুভ লক্ষণ বাহন করে আনে। তবে মুসলিমদের এই ভ্রান্ত ধারণা বিশ্বাস করার কোন সুযোগই নেই। মুসলিমদের এই ধরনের কুসংস্কার বিশ্বাস করা জায়েজ নেই। এটা এক ধরনের শিরক।

চোখ লাফানোর কারণ কি

আমাদের সমাজে অনেকেই বিশ্বাস করে থাকে চোখ লাফানো পরিবারের শুভ ও শুভ  লক্ষণ বহন করে আনে। কিন্তু কোরআন হাদিসে এর কোন ভিত্তি নেই। চোখের পাতা কাপ অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে তবে সেগুলো সবই শারীরিক ও মানসিক সমস্যা কারণে হয়ে থাকে। চোখ কাপর কোন আধ্যাত্মিক কারণ নেই। আমাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চান বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে। চোখ কাঁপা কারণ সম্পর্কে কিছু ধারনা নিচে দেওয়া হল

  1. ভিটামিন বি এর অভাবে
  2. অত্যাধিক মানসিক চাপে থাকলে 
  3. পরিণত ঘুমের ভাবে অভাবে 
  4. চোখে এলার্জি আছে 
  5. অমবরত চোখ চুলকালে
  6. পানি শূন্যতার কারণে কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক দেয় প্রতিক্রিয়ায় পানির কারণে পানির কারণে
  7. পুষ্টির অভাবে
  8. এক দৃষ্টিতে কম্পিউটার স্কিনে তাকিয়ে থাকলে 
  9. বয়স জনিত কারণে 
  10. ক্যাফে ইন অথবা অ্যালকোহল সেবন করলে 
  11. চোখের শুষ্কতার কারণে 
  12. পুষ্টির ভারসাম্যহীনতার কারণে 
  13. চোখের পাতায় কোন সমস্যা থাকলে

চোখ লাফালে সমাধান 

আমাদের অনেকের ভেতর চোখ লাফানো নিয়ে অনেক কুসংস্কার রয়েছে। আমাদের অনেকের ধারণা চোখ লাফানোর ভেতর শুভ ও অশুভ লক্ষণ নিহিত আছে। তবে এই ধরনা গুলো সম্পূর্ণ ভুল। বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে কোরআন ও হাদিসে এর কোন ভিত্তি নেই। চিকিৎসা বিজ্ঞানে চোখ লাফানো নিয়ে অনেক গবেষণা রয়েছে। এবং চোখ লাফানোর কারণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে অনেক যুক্তি রয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে চোখ লাফানোর চিকিৎসা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।

  1. অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমাতে হবে।
  2. অতি মাত্রায় চা ও কফি খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
  3. অ্যালকোহল ও যেকোনো ধরনের নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে।
  4. পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে। দিনে অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
  5. পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে।
  6. পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
  7. যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন ( মোবাইল, কম্পিউটার ) ইত্যাদির ব্যবহার কম করতে হবে।
  8. চোখ সবসময় হাইড্রেট রাখতে হবে।

চোখ লাফালে কখন চিকিৎসরের পরামর্শ নিবেন

মাঝেমধ্যে আমাদের চোখ বিভিন্ন কারণে লাফাতে পারে। ডান চোখ অথবা বাম চোখ লাফানো নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে। ডান অথবা বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে এ সম্পর্কে জানার আগে চলুন আমরা কখন চোখ লাফালে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন সে সম্পর্কে জেনে আসি।

চোখ লাফানোর সাথে চোখ অতিরিক্ত লাল হয়ে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেয়া উচিত। এছাড়া চোখ অতিরিক্ত ফুলে গেলে, চোখের পাতা নিজে থেকে খুলতে অসুবিধা হলে, চোখ দিয়ে অঝোরে পানি বের হলে, দীর্ঘদিন ধরে ডাল অথবা বাম চোখের পাতা লাফালে, চোখ লাফানোর সাথে শরীরের কোন অংশ অসুবিধা হলে বা লাফালে, চোখের পাতা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত।

চোখ লাফানোর সাথে উপরের উল্লেখিত লক্ষণগুলো দেখা গেলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত অনেক ক্ষেত্রে স্নায়ু পিক বিক কারণেও চোখ লাফানোর মতন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আরো পড়ুন:আরবি মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৬



চোখ লাফানো সম্পর্কে হাদীস 

আমাদের মধ্যে অনেকেই বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে এই সম্পর্কে জানতে চাই। হাদীসে চোখ লাফানো সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায় না। তবে হয়রত মুহাম্মদ সাঃ কোন ধরনের কুসংস্কার বিশ্বাসকে নিষেধ করেছেন। হযরত মুহাম্মদ সাঃ কুসংস্কার বা অমঙ্গলে বিশ্বাস শিরকের একটি  রূপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন নিশ্চয়ই কুসংস্কার শিরক।
  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন কোন রোগ সক্রিয়ভাবে ছড়ায় না ,কোন অমঙ্গলের লক্ষণ নেই ,কোন প্যাচার ডাক অশুভ নয়, এবং কোন মাস অমঙ্গল নয়।
  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন যে ব্যক্তি কুসংস্কারের কারণে কোন কাজ করে থাকে বা ছেড়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকে সে শিরকের একটি অংশের সাথে জড়িয়ে পড়ে।
  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন যে ব্যক্তি কোন অমঙ্গল দেখে ভয় পায় এবং আল্লাহর উপর ভরসা করে সে ব্যক্তিকে আল্লাহ ভয় থেকে রক্ষা করে।
  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন কোন কুসংস্কারে বিশ্বাস করার উপর মঙ্গল নেই। তবে আল্লাহর উপর নির্ভর করা উত্তম।
  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন কুসংস্কার হল এমন কিছু যা তোমাদের মনকে প্রভাবিত করে তা আল্লাহর উপর ভরসা করলে তা মুছে যায়।
  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন তোমরা যেন কুসংস্কারে বিশ্বাস না করো কেউ কোন অশুভ লক্ষণ দেখলে বলবে হে আল্লাহ তুমি কল্যাণ আন ও তুমি অমঙ্গল দূর কর।
  • এক সাহাবী সালামের রাসূল সাল্লাল্লাহু সালামকে জিজ্ঞেস করলেন হে আল্লাহ রাসূল আমাদের মনে মাঝে মধ্যে কুসংস্কার আসে এটা কি গুনাহ। রাসূল সাঃ বললেন না যদি তোমাদেরকে কোন কাজ থেকে বিরত না রাখে।
  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন কুসংস্কার বিশ্বাস মানুষের অজ্ঞতার পরিচালক আর আল্লাহর উপর বিশ্বাস ঈমানদারের পরিচালক।
  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন কুসংস্কারে বিশ্বাসীদের আল্লাহতালা সফলতা দান করেন না।
  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন যে ব্যক্তি কুসংস্কার থেকে বিরত থাকে এবং আল্লাহর উপর ভরসা করে আল্লাহ তাকে নিরাপত্তা ও প্রশান্তি দান করেন।
  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন যে কুসংস্কারে বিশ্বাস করে সে তার নিয়তির উপর সন্তুষ্ট নয়।
  • হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন যে কুসংসারকে বিশ্বাস করে সে আল্লাহর প্রতি ভরসা হারায় আর যে আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখে তার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট।

কুসংস্কার সম্পর্কে কোরআন

ডান চোখ লাফালে কি হয় ইসলামী শরীয়তে এর বিধান কি । কুসংস্কার হল শুধুমাত্র ধারণা ও কল্পনাভিত্তিক বিশ্বাস কুরআন ও হাদিস সম্পর্কে অবজ্ঞ। ব্যাক্তিরাই কুসংস্কারকে বিশ্বাস করে আধুনিক যুগের অনেক মানুষ এখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে যা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।কুসংস্কার কি শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

আল্লাহ কুরআনে উল্লেখ করেছেন, ওরা বলতো তুমি এবং তোমার সঙ্গীরা যারা আছো তাদেরকে আমরা অশুভ মনে করি। সালেহো বললেন তোমাদের শুভ ও অশুভ আল্লাহর উপর বিদ্যমান। তোমরা এমন একটি সম্প্রদায় যাদেরকে আল্লাহ পরীক্ষা নিচ্ছেন। (সূরা নমল আয়াত ৪৭)

প্রাচীনকালে আরবের লোকেরা কোন কাজ করার ইচ্ছা হলে আগে পাখি উড়িয়ে পরীক্ষা করত। যদি পাখিটি ডান দিকে উড়ে যেত তবে সে কাজটিকে বা সফর টিকে শুভ বলে মনে করতো। আর যদি পাখিটি বাম দিকে উড়ে যেত তাহলে সেই কাজ বা সফল টিকে অশুভ বলে মনে করতো, এবং সে কাজ করা থেকে বিরত থাকতো। ইসলামে কোন কাজকে শুভ ও অশুভ মনে করা জায়েজ নয়। বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে এ সম্পর্কে জানার আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে কিন্তু চোখ লাফালে কি হয় এই সম্পর্কে বিশ্বাস করা শিরক। তবে কোন কিছুতে আশা করা বৈধ। সুতরাং প্রকৃত মুমিনরা কখনোই কোন কাজকে শুভ ও অশুভ মঙ্গল ও অমঙ্গল এসব কিছু বিশ্বাস করতে পারে না। শুভ ও অশুভ লক্ষণ বলে কিছুই নেই। তোমাদের কাছে যে শুভ ও অশুভ অবস্থান এসেছে তা সম্পূর্ণ আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। আল্লাহ তোমাদেরকে দুষ্টতার ভ্রষ্টতার অবকাশ দিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছেন।

কোরআনের উল্লেখ আছে, যখন তাদের কাছে কোন কল্যাণ আসতো তখন তারা বলতো এটা আমাদের নিজেদের প্রাপ্য। আর যখন অকল্যাণ আসতো তখন তারা এটা কে মুসা ও তাদের সঙ্গীদের অশুভ কারণ রূপে মনে করত। কিন্তু তাদের অশুভ আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ নিয়ন্ত্রণাধীন কিন্তু তারা তা জানে না। (সূরা বায়ান আয়াত ১৩১)

কল্যান অর্থ হল ফল ও ফসলের প্রাচুর্য। আর এর বিপরীত অকল্যাণ এর  অর্থ হলো অনাবৃষ্টি ও ফসলের উৎপাদন কম হওয়া। কাফেররা তাদের কল্যাণের কারণ হিসেবে নিজেদের চেষ্টা ও পরিশ্রমের ফল হিসেবে মনে করত। আর অকল্যা বা অনাবৃষ্টি ও ফসল না হওয়ার কারণ হিসেবে মুসা ও তার সঙ্গীদের কে মনে করত। তারা বলতো তোমাদের অশুভ আগমনের কারণে এই অকল্যাণ আমাদের উপর পড়েছে। যেহেতু পাখির ডান ও বাম উড়ে যাওয়াকে মানুষ শুভ ও অশুভ মনে করত। এজন্য শুভ লক্ষণের অর্থ ব্যবহার হয়েছে। আল্লাহ বলেন তোমাদের উপর শুভ ও অশুভ লক্ষণ যা আসে তার সম্পন্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। শুভ ও অশুভ আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন। তাদের অশুভ আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে আর তার কারণ তাদের কুফরি।

আল্লাহ বলেছেন তোমরা যেখানেই থাকো না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই। যদিও বা তোমরা সুদূর্গ  অবস্থান করো না কেন। আর যখন তাদের কাছে কল্যাণ পৌঁছাত তখন তারা বলতো এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। আর যদি কোন অকল্যাণ হত তখন তারা বলতো এটা তোমাদের পক্ষ থেকে এসেছে। বল সবকিছু আল্লাহর থেকে আসে পক্ষ থেকে আসে। সুতরাং এই কওমের কি হলো। তারা কোন কথা বুঝতে চায় না। (সূরা আল নিসা, আয়াত ৭৮)

সুতরাং চোখ লাফানো শুভ ও অশুভ লক্ষণ এগুলো ভাবা কুসংস্কার। উপরে আমরা ডান অথবা বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে এই সম্পর্কে জানলাম। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি কোরআন ও হাদিসে চোখ লাফানো নিয়ে কুসংস্কারের কোন ভিত্তি নেই।

কুসংস্কার কি শিরকের অন্তর্ভুক্ত

কুসংস্কার হল এক প্রকার শিরক। বর্তমান সমাজে মানুষের এমন কিছু অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কার বিশ্বাস করে যা এক প্রকার শিরকের অন্তর্ভুক্ত। শিরক থেকে বেঁচে থাকার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন। হয়রত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন কুসংস্কার বিশ্বাস করা শিরক। সব কুসংস্কার শিরক না হলেও কিছু কিছু কুসংস্কার আমাদেরকে শিরকের পর্যায়ে নিয়ে চলে যায় । আল্লাহ কুরআনে এ সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন 

আর তোমরা আল্লাহকে ছাড়া এমন কাউকে আহবান করো না। যে তোমাদের কোন উপকার বা ক্ষতি করতে পারবে না আর তোমরা যদি এমনটা কর তাহলে তোমরা জালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।(সূরা ইউনুস, আয়াত ১০৬ )

যদি তোমরা আল্লাহ বাদে এমন কোন উপাস্যকে ডাকো যে তোমাদের কোন উপকার ও অপকার করতে পারে না। তবে তা আল্লাহর সাথে শিরক করা হবে। এটা জুলুমের অন্তর্ভুক্ত। জুলুম হল কোন জিনিসকে তার নিজ স্থান থেকে সরিয়ে অন্য স্থানে রাখা। ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর হক। যিনি এই সমস্ত বিশ্ব জগতকে সৃষ্টি করেছেন এবং জীবনধারণের সমস্ত উপকরণের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ আরো বলেছেন যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করবে যে বিষয়ে কুরআন ও হাদীসের কোন অনুমোদন নেই তা অবশ্যই প্রত্যাখ্যাত হবে। সুতরাং ডান চোখ লাফালে কি হয় ইসলামী শরীয়তে এটি বিশ্বাস এক প্রকার শিরকের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তালা তায়ালা বলেছেন আমি যাকে ইচ্ছা উপকার করি ও যাকে ইচ্ছা ধ্বংস করি। আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কিছু হয় না। কুসংস্কারে বিশ্বাসীরা আল্লাহর উপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। এজন্যই কুসংস্কার এক প্রকাশ শিরক।

বিজ্ঞানের ভাষায় চোখ লাফানোর কারণ

উপরে আমরা ডান অথবা বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে এই সম্পর্কে জানলাম। চলুন এবার জেনে আসা যাক চোখ লাফানো নিয়ে বৈজ্ঞানিক ভাষায় কি বলে। আমাদের চোখের পাতা লাফানো খুবই সাধারন একটি ব্যাপার। আমাদের সবার জীবনের কোন না কোন সময় চোখ লাফানো সমস্যাই ভুগেছি। অনেকে এটাকে শুভ অথবা শুভ লক্ষণ ভেবে থাকে তবে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে কিংবা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে এর কোন ভিত্তি নেই।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে চোখ লাফানো খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় চোখ লাফানোকে মায়োকিমিয়া বলা হয়ে থাকে। চোখ লাফান সাধারণত আমাদের চোখের পেশিগুলোর সংকোচন ও প্রসারণ এর কারণে হয়ে থাকে। সাধারণত অত্যাধিক মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির অভাবে চোখ লাফাতে পারে।

চোখ লাফানো নিয়ে কুসংস্কার

বর্তমান যুগে এসেও চোখ লাফানো নিয়ে আমাদের সমাজের অনেক মানুষের ভেতর কুসংস্কার রয়েছে। আমাদের সমাজের অনেকেই মনে করেন চোখ লাফানোর ভেতর সুলক্ষণ ও কুলক্ষণ নিহিত রয়েছে বা এটি কোন ঘটনা ঘটার পূর্বাভাস। মনে করা হয় পুরুষদের ডান চোখ ও নারীদের বাম চোখ লাফানো ভালো লক্ষণ অন্যদিকে পুরুষদের বাম চোখ ও নারীদের ডান চোখ লাফানো অশুভ লক্ষণ বলে মনে করা হয়। 

তবে চোখ লাফানোর এসব বিশ্বাসের বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নেই। প্রাচীন কাল থেকে মানুষ এসব কুসংস্কার বিশ্বাস করে আসছে। এই কুসংস্কারে বিশ্বাসের কারণে চোখ লাফানো নিয়ে অনেক মানুষ দুশ্চিন্তায় ভুগে থাকেন। কুসংস্কারে বিশ্বাস মানুষের মনের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। সুতরাং আমাদের সবার উচিত এ সমস্ত কুসংস্কার থেকে নিজেকে দূরে রাখা ও অন্যকে সতর্ক করা। এজন্য আমাদের উচিত ডান অথবা বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে এই সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখা।

উপসংহার 

উপরে আমরা ডান অথবা বাম চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে এই সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসের আলোকে আলোচনা করছি। ডান চোখ লাফালে কি হয় ইসলামী শরীয়তে এর কোন ভিত্তি নেই। যেখান থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় আমাদের ডান অথবা বাম চোখ লাফানো কোন শুভ ও অশুভ লক্ষণ বহন করে না। চোখ লাফানো সম্পর্কে কুধারণা আমাদের কুরআন ও হাদীসের সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাব ও কুসংস্কার ফল।

চোখ লাফানোর কারণ আমাদের শরীরিক ও মানসিক অসুস্থতা। চিকিৎসা বিজ্ঞানে চোখ লাফানোকে সাময়িক সময়ের জন্য শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতার কারণ হিসেবে ধরা হয়। সুতরাং আমাদের চোখ লাফানোকে স্বাভাবিক ভাবে দেখা উচিৎ। তবে অনেক দিন ধরে চোখ লাফালে কিংবা অতিরিক্ত চোখ লাফালে দেরি না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উচিত।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url